আপনি কি নতুন ব্লেন্ডার কিনতে যাচ্ছেন? বাজারে নানা ব্র্যান্ড, মডেল, ফিচার, দাম এর ব্লেন্ডার রয়েছে। যার ফলে কোন ব্লেন্ডারটি কিনবেন তা ঠিক করা খুবই কঠিন। চিন্তার কিছু নেই, আপনাদের জন্যই আমাদের এই পোস্টটি…
এই গাইডে আমরা দেখাবো কীভাবে‑‑মোটর পাওয়ার, RPM, ব্লেডের ধরন, ক্যাপাসিটি এবং বাজেট বিবেচনা করে আপনার জন্য একদম উপযোগী ব্লেন্ডারটি বাছাই করবেন।
এখন চলুন শুরু করি, আমরা ধাপে ধাপে দেখাবো কীভাবে সঠিক ব্লেন্ডার বাছাই করবেন।
আরও জানতে পড়ুন: আমাদের বাংলাদেশে সেরা ব্লেন্ডার পোস্টটি দেখুন, যেখানে দাম, রিভিউ এবং বেস্ট তালিকা দেয়া হয়েছে।
বাজেট গাইড — কোন দামে কী আশা করবেন?
ব্লেন্ডার কিনতে গেলে বাজেট একটা বড় বিষয়। বাংলাদেশি বাজারে দাম ব্র্যান্ড, মডেল, ওয়াট, জারের আকার ও মেটেরিয়াল অনুযায়ী ভিন্ন।
তাই যে বাজেটে আপনি ব্লেন্ডার কিনবেন, সেই বাজেটে কি ধরনের পারফরম্যান্স পাবেন তা বোঝা দরকার। নিচে বাজেট অনুযায়ী সম্ভাব্য দাম ও প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দেখানো হলো।
Low Budget — খুবই সস্তা ব্লেন্ডার (প্রায় ৳১,৫০০–৩,০০০)
- এই ক্যাটেগরিতে সাধারণত লোকাল বা বেসিক ব্র্যান্ড পাওয়া যায়।
- মোটর ওয়াট কম হতে পারে (যেমন ২৫০–৪০০W), এবং ব্লেড খুব শক্ত/বেশি উন্নত নাও হতে পারে।
- জার সাধারণত প্লাস্টিক হবে এবং ক্যাপাসিটিও মাঝারি (1–1.5 লিটার) হবে।
- ওভারহিট প্রোটেকশন বা থার্মাল কাউফ-সহ ফিচার এই স্তরে কম দেখা যায়।
- এই ধরণের ব্লেন্ডার “দিনে এক–দু’বার হালকা কাজ” (স্মুথি, জুস) এর জন্য কাজ দেয়।
আরও জানতে পড়ুন: বাংলাদেশে ১,০০০–৩,০০০ টাকার মধ্যে সেরা ব্লেন্ডার তালিকা
Medium Budget — মধ্যবর্তী (মিড‑রেঞ্জ) ব্লেন্ডার (প্রায় ৳৩,০০০–৬,০০০)
- মোটর সাধারণত ৪০০–৬৫০W হতে পারে, যা বেশি ভারী কাজ (মিশ্রণ, কিছু ছোট আইস) সামলাতে পারে।
- জার ক্যাপাসিটি বেশি হতে পারে — 1.5 লিটার বা তার বেশি।
- জার মেটেরিয়াল ভালো হতে পারে (উচ্চ-মানের প্লাস্টিক বা ট্রাইটান), এবং ব্লেড স্টেইনলেস স্টিল হতে পারে।
- থার্মাল প্রোটেকশন, লিড লক বা সেফটি ফিচার এখানে বেশি সম্ভব থাকে।
- দৈনন্দিন ব্যবহারে বেশি ভারসাম্যপূর্ণ গতির (RPM) পারফরম্যান্স পেতে পারবেন।
আরও জানতে পড়ুন:
High Budget— প্রিমিয়াম বা হেভি‑ডিউটি ব্লেন্ডার (প্রায় ৳৬,০০০+)
- মোটর শক্তিশালী (৬৫০W বা তার বেশি), যা আকারে বড় জার, বরফ কুচকানো, বা দীর্ঘ সময় ব্লেন্ড করার জন্য উপযুক্ত।
- জার মেটেরিয়াল হিসেবে গ্লাস, ট্রাইটান বা উন্নত প্লাস্টিক থাকতে পারে।
- ব্লেড ডিজাইন উন্নত (serrarated, multi‑angle) থাকতে পারে যা শক্তিশালী মিশ্রণ ভালোভাবে পারে।
- থার্মাল কাপ-অফ, rubber বেস, লিড লক, স্পেয়ার পার্ট অ্যাভেইলেবিলিটি — এসব ফিচার থাকতে পারে।
- দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্স, বেশি গ্যারান্টি এবং ভালো কোয়ালিটি আশা করা যায়।
আরও জানতে পড়ুন:
ব্লেন্ডার vs মিক্সার গ্রাইন্ডার vs হ্যান্ড ব্লেন্ডার — কোনটা কোন কাজের জন্য?

অনেকেই ব্লেন্ডার, মিক্সার গ্রাইন্ডার এবং হ্যান্ড ব্লেন্ডারের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারেন না। তাই আমরা সহজ ভাষায় এবং বাংলাদেশ এর প্রেক্ষাপটে ব্যাখ্যা করছি।
ব্লেন্ডার (Blender)
- মূলত তরল এবং নরম খাবারের জন্য।
- ব্যবহার: স্মুদি, মিল্কশেক, লাচ্ছি, সুপ, সস, বেবি ফুড।
- নরম ফল যেমন পেঁপে, কলা, আম।
- সফট আইস ক্রাশ করা যায়।
মিক্সার গ্রাইন্ডার (Mixer Grinder)
- মূলত শুকনো এবং শক্ত উপাদানের জন্য।
- ব্যবহার: মসলা, দানা, বাদাম, ডাল, চিনি, কফি, পেঁয়াজ/আদা/রসুন বাটা।
- টিপ: ছোট dry jar থাকলে দৈনন্দিন মশলা ব্লেন্ড সহজ হয়।
হ্যান্ড ব্লেন্ডার (Hand Blender)
- মূলত দ্রুত কাজ এবং portability-এর জন্য।
- ব্যবহার: সরাসরি পাত্রে সুপ বা সস ব্লেন্ড করা, ছোট ব্যাচের স্মুদি, বেবি ফুড পিউরি, হুইপিং ক্রিম বা ছোট তরল মিশ্রণ।
বাংলাদেশি ব্যবহার অনুযায়ী সহজ নির্দেশিকা:
- তরল + নরম খাবার → ব্লেন্ডার
- শুকনো + শক্ত উপাদান + মসলা → মিক্সার গ্রাইন্ডার
- দ্রুত ও ছোট কাজ/portability → হ্যান্ড ব্লেন্ডার
- ছোট পরিবার বা light use household-এ হ্যান্ড ব্লেন্ডার practical।
বাংলাদেশে ব্লেন্ডার কিনার আগে যেসব জিনিস খেয়াল রাখবেন
বাজারে নানা ধরনের ব্লেন্ডার থাকায় সঠিকটি বেছে নেওয়া একটু কঠিন। সঠিক ব্লেন্ডার বেছে নেওয়ার জন্য এই মূল বিষয়গুলো আগে বুঝে নেওয়া জরুরি।
ব্লেন্ডারের মোটর (Motor) — সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ
ব্লেন্ডারের “হৃদপিণ্ড” হলো মোটর। যে ব্লেন্ডারের মোটর ভালো, সেই ব্লেন্ডার দীর্ঘদিন টিকে; কম ঝামেলা দেয়, কম গরম হয়, আর ব্লেন্ডিংও মসৃণ করে। তাই মোটরের বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকা জরুরি।
নিচে মোটর সম্পর্কিত সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সহজভাবে ব্যাখ্যা করা হলো।
মোটরের Watt (ওয়াট) কত হওয়া উচিত?

হ্যাঁ, কাগজে-কলমে ঠিক। কিন্তু বাস্তবে, এটা পুরোপুরি সত্য না।
অনেকেই ভাবেন, “500W মানে অবশ্যই 300W থেকে শক্তিশালী।”
Watt বলে মোটর কত বিদ্যুৎ খরচ করছে, কিন্তু এর মানে এটা না যে সেই শক্তিকে সেটা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারবে। মোটরের গুণমান, এর কপার কয়েল, বেয়ারিং, এসব জিনিস আসল পারফরম্যান্স ঠিক করে।
- 300–400W: হালকা কাজের জন্য পারফেক্ট। নরম ফল, জুস, শেক বা লাইট স্মুথি তৈরি করা যায়।
- 500–600W: মাঝারি মিক্সিং এবং ঘন স্মুথি বা লাচ্ছি বানানোর জন্য উপযুক্ত।
- 700–800W+: ভারী কাজের জন্য ভালো। মশলা, বাদাম পিষা বা আইস ক্রাশিং করা যায়।
- 1000W+: প্রিমিয়াম বা হেভি‑ডিউটি ব্লেন্ডার। বড় পরিবার, বেশি ব্যবহার বা বিদেশি ব্যবহারকারীদের জন্য।
বাংলাদেশে ব্যবহারের জন্য সেরা: 500–750W।
RPM (Revolutions Per Minute) আসলে কী? – সহজ ভাষায়
RPM মানে মোটর এক মিনিটে কত রাউন্ড ঘুরছে।
শুনতে যত সহজ, ব্যবহারিক দিক থেকে ততটাই ভুল বোঝাবুঝি আছে।
বেশি RPM = বেশি গতি
কিন্তু:
- অতিরিক্ত RPM-এ মোটর দ্রুত গরম হয়
- লাচ্ছি/স্মুথিতে ফোম তৈরি করে
- ঘন বা ভারী খাবার blend করতে RPM কমে যায়
- RPM বেশি হলে Noise-ও বাড়ে
একটা ভালো ব্লেন্ডারের বৈশিষ্ট্য হলো স্থিতিশীল RPM অর্থাৎ প্রেসার পড়লেও RPM কমে না।
বাংলাদেশি রান্নাঘরের জন্য RPM ideally: ১৮,০০০–২২,০০০ RPM
Torque (টর্ক) — নামটা জটিল, ব্যাখ্যা একদম সহজ
Torque হলো “শক্তি ধরে রাখার ক্ষমতা।”
যেমন, আপনার ব্লেন্ডার দারুচিনি, বাদাম, চিনি, বরফ এসব blend করতে গেলেই দেখবেন মোটর আটকে যায় বা শব্দ বদলে যায়। এটাই টর্কের অভাব।
যদি মোটরের টর্ক কম হয়:
- ব্লেড ঘোরে কিন্তু খাবারে প্রভাব পড়ে না
- টাইট মিশ্রণ blend হয় না
- মোটর গরম হয়
- চালাতে একটু বেশি চাপ পড়ে
সুতরাং, Blender কিনলে শুধু Watt নয়, torque stability-ও দেখতে হবে (যদিও এটা লিখে দেয় না, তাই review বা hands-on feedback দরকার)।
Thermal Overheat Protection কেন জরুরি?
ওভারহিট প্রোটেকশন থাকার মানে হলো ব্লেন্ডারের মোটর অতিরিক্ত গরম হলে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়, যাতে মোটর বা ব্লেন্ডারের অন্য অংশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
এর উপকারিতা:
- মোটর পুড়ে যাওয়ার সুযোগ কম
- বেশি দিন টেকে
- নিরাপদ
- ভোল্টেজ ড্রপেও মোটর বাঁচে
ব্লেড (Blades) — শক্তি না থাকলে Blend ঠিক হবে না
মোটর যতই ভালো হোক, ব্লেড যদি সঠিক না হয়, জুস হোক, লাচ্ছি হোক, স্মুথি হোক, চাটনি হোক, কোনো কিছুই ঠিকভাবে blend হবে না।
অনেকেই ব্লেডকে গুরুত্ব দেন না, কিন্তু বাস্তবে ব্লেডই ঠিক করে—
- মসৃণতা (smoothness)
- গতি (speed)
- আইস ক্রাশিং
- আঁশযুক্ত ফল blend হওয়া
- মশলা বাটা
- শব্দ ও কম্পন
চলুন সহজভাবে ব্লেড সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিই।
ব্লেডের সংখ্যা (2-blade, 4-blade, 6-blade)—কোনটা ভালো?
অনেকেই ভাবেন “বেশি ব্লেড মানেই বেশি পাওয়ার।” সব সময় তা না।
২-টাইপ ব্লেড (2-blade)
- সাধারণত পাতলা
- শেক/জুসে ভালো
- মশলা বা শক্ত কিছুতে ভালো না
যে জন্য উপযুক্ত: নরম ফল, মিল্কশেক, হালকা ব্যবহার
৪-টাইপ ব্লেড (4-blade)
এটা বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ডিজাইন। কারণ এতে speed, cutting, blending সবকিছুর balance থাকে।
- ঘন স্মুথি ভালো হয়
- পেঁপে, কলা, আমের লাচ্ছি fluffy না হয়ে smooth হয়
- চাটনি, টমেটো blend ভালো
- Ice (soft) blend মধ্যম মানে হয়
যে জন্য উপযুক্ত: পরিবারিক ব্যবহার, দৈনন্দিন বাংলাদেশি রেসিপি
৬-টাইপ ব্লেড (6-blade / Multi-blade)
অনেকে এটাকে “Pro blade” বলে।
- আইস ক্রাশিং ভালো
- ঘন স্মুদি (কলা, পিনাট বাটার) মসৃণ হয়
- বড় জারে লিকুইড ভালোভাবে ঘুরে
- শক্ত উপাদান সহজে blend হয়
তবে অসুবিধা হলো, Noise একটু বেশি, আর কিছু ক্ষেত্রে বড় মিশ্রণেই বেশি কাজ দেয়।
যে জন্য উপযুক্ত: যারা একটু heavy use করেন, ice crush চান, nuts blend করতে হয়
Serrated Blade — এটা কি সত্যিই দরকার?
Serrated মানে দাঁত-ওয়ালা কাটার মতো ব্লেড (knife-এর মতো)। এটা শক্ত জিনিসে ভালো কাজ করে যেমনঃ
- বরফ
- বাদাম
- শুকনো মশলা
- ফ্রোজেন ফল
Bangladesh-এ যেহেতু অনেক বাড়িতে মশলা + আইস + চাটনি করা হয়। তাই, Serrated ব্লেড থাকা উপকারী। তবে নরম খাবারেও এটা ব্যবহার করা যায়।
যে জন্য উপযুক্ত: Serrated ব্লেড থাকলে বহুমুখী ব্যবহার সম্ভব।
ব্লেড মেটেরিয়াল (Material) — স্টিল কেন সবসময় সেরা?
সেরা ব্লেড সবসময় Stainless Steel (304 grade) হয়।
কারণ:
- মরিচা ধরে না
- গন্ধ ধরে না
- লম্বা সময় স্থায়ী
- Ice বা কড়া খাবারে ক্ষতি কম
- পরিষ্কার করা সহজ
প্লাস্টিক বা সস্তা অ্যালয় ব্লেড অবশ্যই এড়ানো উচিত।
ব্লেডের এঙ্গেল (Blade Angle) — এটাই ব্লেন্ডিং smooth করে
দেখবেন, ব্লেন্ডারের সব ব্লেড একদিকে না। কিছু ব্লেড নিচের দিকে বাঁকানো, কিছু উপরের দিকে।
এটাই circulation control করে—
- নিচের ব্লেড খাবার টেনে নিচে আনে
- উপরের ব্লেড উপরের অংশ কাটে
- মাঝের ব্লেড spin তৈরি করে liquid ঘোরায়
যার ফলে খাবার সমানভাবে blend হয়, আর লাচ্ছি/শেক-এ বড় বড় টুকরা থাকে না।
কোন ধরনের কাজে কোন ব্লেড ভালো? (Quick Guide)
| কাজ | সেরা ব্লেড টাইপ |
| নরম ফল (কলা, আম) | ৪- ব্লেড |
| স্মুদি/লাসি | ৪-ব্লেড বা ৬-ব্লেড |
| আইস ক্রাশ | Serrated + ৬-ব্লেড |
| চাটনি | মিক্সার টাইপ ছোট ২/৪ ব্লেড |
| মসলা | ২-ব্লেড (মোটা স্টেইনলেস স্টীল) |
| ফ্রোজেন ফল | ৬-ব্লেড |
জার (Jar) — কোন মেটেরিয়াল ও ক্যাপাসিটি বেছে নেবেন?

ব্লেন্ডারের জার (Jar) হলো যেখানে আসল কাজ হয়। মোটর যতই শক্তিশালী হোক, ব্লেড যতই ভালো হোক, জার যদি ঠিক না হয়, তাহলে ব্লেন্ডিং smooth হবে না, পরিষ্কার করতে ঝামেলা হবে, আর দীর্ঘস্থায়িত্ব কমে যাবে।
চলুন, সহজ ভাষায় জারের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো দেখি।
জারের মেটেরিয়াল (Material) — Plastic, Tritan, Glass
১) Plastic (প্লাস্টিক (পলিকার্বনেট / BPA-মুক্ত) জার
- হালকা, সহজে ধরা যায়
- পড়ে গেলে ভাঙে না
- বাজেটের জন্য সবচেয়ে ভালো
২) Tritan (ট্রাইটান)
- প্রিমিয়াম প্লাস্টিক, BPA-free
- স্ক্র্যাচ ও গন্ধ কম ধরে
- হালকা, কিন্তু ভালো
- ঢালাও ব্যবহার, পরিবারের জন্য উপযুক্ত
৩) Glass (গ্লাস)
- স্ক্র্যাচ ও গন্ধ ধরে না
- কিন্তু ভারী, পড়ে গেলে ভেঙে যেতে পারে
- যারা কিচেন অ্যাস্থেটিক বা ট্র্যাডিশনাল ফিল পছন্দ করেন তাদের জন্য ভালো
জারের ক্যাপাসিটি (Capacity) — কত লিটার নেবেন?
যত বড় পরিবার, তত বড় জার দরকার।
- ১.০ লিটার → ছোট পরিবার/দম্পতি/হালকা ব্যবহার
- ১.৫–২.০ লিটার → মাঝারি/বড় পরিবার/দৈনিক ব্যবহার
- ২.৫ লিটার+ → হেভি ইউজ/পার্টি/ফ্রোজেন ফল + স্মুদি প্রেমীদের জন্য
টিপ: বাংলাদেশি ঘরগুলোতে প্রায়ই ডাল বাটা, চাটনি, জুস, মসলা, এসব ব্লেন্ড হয়, তাই ১.৫–২ লিটার জার সবচেয়ে ব্যবহার উপযোগী।
ড্রাই জার বনাম ওয়েট জার (Dry Jar vs Wet Jar)
- ওয়েট জার (লিকুইড জার) → শেক, লাসি, স্মুদি, সূপ
- ড্রাই জার (গ্রাইন্ডার জার) → মসলা, কফি, মসলা, চাটনি, ডাল বাটা
টিপ: বেশিরভাগ বাড়িতে দুই জারই থাকা সুবিধাজনক—একটি তরল, আর একটি শুকনো কাজের জন্য।
শব্দ, তাপ এবং নিরাপত্তা — BD বাজারে খুব উপেক্ষিত বিষয়
বাংলাদেশে ব্লেন্ডার কিনলে অনেকেই শব্দ বা হিটের বিষয়টি গুরুত্ব দেন না। কিন্তু বাস্তবে এগুলো ব্যবহারের সুবিধা বাড়াতে এবং মোটরের আয়ু দীর্ঘ করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্লেন্ডার বেশি শব্দ করলে তা কমানোর সহজ উপায় জানতে পারেন এখানে।
কেন বেশিরভাগ ব্লেন্ডার দ্রুত গরম হয়ে যায়?
- Low voltage / voltage drop (বিশেষ করে লোডশেডিং সময়)
- Heavy blending (মশলা, বরফ, frozen fruits)
- বিরতি ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে ব্লেন্ড করা
- কম-দামী বা সস্তা মোটর
টিপ: বাংলাদেশি পরিবেশে, মিডিয়াম ওয়াট + থার্মাল প্রোটেকশন ব্লেন্ডার বেশি টেকসই।
ওভারহিট প্রোটেকশন (Overheat Protection)
ওভারহিট প্রোটেকশন এর মানে হলো: মোটর যদি বেশি গরম হয় → ব্লেন্ডার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
উপকারিতা:
- মোটর পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা
- শব্দ ও কম্পন কমানো
- বাচ্চা ও বড়দের জন্য নিরাপত্তা
- ভোল্টেজ ড্রপ থাকলেও মোটর রক্ষা পায়
ব্লেন্ডারে এসব নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার
বাংলাদেশি ক্রেতাদের বিশেষ লক্ষ্য করে দেখা যায় কিছু ছোট নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য খুব কাজে আসে:
- লিড লক (Lid Lock): লিড না লাগালে ব্লেন্ডার চালাবে না
- রাবার ফুট / নন-স্লিপ বেস (Rubber Foot / Non-slip Base): কম্পন কমায়, কাউন্টারটপে স্ক্র্যাচ হয় না
- শক প্রোটেকশন: আর্দ্র কিচেন পরিবেশে বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে
বাংলাদেশি পরিবারের জন্য ব্লেন্ডার বাছাই টিপস
বাজারে ব্লেন্ডার যত ধরনের মডেলই থাকুক, বাংলাদেশি বাস্তবতার জন্য কিছু ফিচার বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
এখানে সেই ব্যবহারিক টিপস গুলো দেওয়া হলো, যাতে আপনি দীর্ঘস্থায়ী, সুবিধাজনক এবং পরিবার-বান্ধব ব্লেন্ডার বেছে নিতে পারেন।
লোডশেডিং সহ্যশীল মোটর
- বাংলাদেশে লোডশেডিং খুব সাধারণ। সংবেদনশীল মোটর ভোল্টেজ কমে গেলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
- কম পাওয়ার হলেও ভালো ঘূর্ণন শক্তি থাকা মোটর বেশি টেকসই।
- টিপ: ৫০০–৭৫০ ওয়াটের মোটর এবং তাপ সুরক্ষা থাকলে সাধারণ লোডশেডিংয়ে টিকে থাকে।
স্পেয়ার পার্টস ও সার্ভিস সহজলভ্যতা
- জার, ব্লেড, গ্যাসকেট সহজে পাওয়া উচিত।
- স্থানীয় সার্ভিস সেন্টার বা অনুমোদিত মেরামত কেন্দ্র চেক করুন।
- ট্রিটান বা প্লাস্টিক জার বেশি ব্যবহারযোগ্য, কারণ কাচের জার ভাঙলে রিপ্লেস করা সহজ।
সহজ সার্ভিস করা যায় এমন ডিজাইন
- প্লাগ অ্যান্ড প্লে ডিজাইন এবং বিচ্ছিন্ন করা যায় এমন ব্লেড থাকলে সার্ভিস সহজ।
- মোটর হাউজিং সহজে খুলে মেরামত করা যায়।
- অতিরিক্ত গরম হলে রিসেট করার ব্যবস্থা সহজ হওয়া উচিত।
বাংলাদেশি ফল ও খাবার ব্লেন্ডিং
- আম, পেঁপে, কলা → স্মুদি, লাচ্ছি
- টমেটো, পেঁয়াজ, রসুন → চাটনি বা পেস্ট
- ডাল → ডাল পেস্ট
- টিপ: চার-ধারের স্টেইনলেস স্টীল ব্লেড এবং ১.৫–২ লিটার জার দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট।
মশলা বাটা বা ভারী কাজ
- কারি পেস্ট, আদা-রসুন পেস্ট, মরিচ পেস্ট
- শুকনো মিহন জারের প্রয়োজন
- ছোট ব্যাচে একাধিকবার ব্লেন্ড করলে মোটরের চাপ কমে।
পরিবারের আকার অনুযায়ী ক্ষমতা
- ছোট পরিবার → ১–১.৫ লিটার জার, ৩০০–৫০০ ওয়াট মোটর
- মাঝারি/বড় পরিবার → ১.৫–২ লিটার জার, ৫০০–৭৫০ ওয়াট মোটর
- বেশি ব্যবহারকারী বা বরফ/বাদাম ব্লেন্ড করলে → ৭৫০ ওয়াট বা তার বেশি
দৈনন্দিন বনাম কখনো ব্যবহার
- দৈনন্দিন → শক্তিশালী মোটর, সহজে পরিষ্কার করা যায় এমন জার, কম শব্দ
- কখনো ব্যবহার → সাধারণ মডেল, কম ওয়াট যথেষ্ট
বিদ্যুৎ খরচ ও দক্ষতা
- উচ্চ ওয়াট মোটর → দ্রুত ব্লেন্ড, বেশি বিদ্যুৎ খরচ
- সঠিক ঘূর্ণন শক্তি এবং জারের আকার → দক্ষ ব্লেন্ডিং, বিদ্যুৎ সাশ্রয়
- মোটর বেছে নিন যাতে গতি ও দক্ষতার মধ্যে সঠিক ভারসাম্য থাকে
Maintenance টিপস — ব্লেন্ডার দীর্ঘস্থায়ী করার উপায়

ব্লেন্ডার শুধু ভালো বাছাই করলেই হবে না — নিয়মিত যত্নও নিতে হবে। ব্লেন্ডার পরিষ্কার রাখার সহজ এবং কার্যকর উপায় জানতে পারেন এই পোস্টে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেওয়া হলো যাতে আপনার ব্লেন্ডার দীর্ঘ সময় টিকে এবং সবসময় ভালো পারফরম্যান্স দেয়:
- প্রত্যেকবার ব্যবহারের পরে পরিষ্কার করুন
জার, ব্লেড, এবং ঢাকনা (lid) ব্যবহার করার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধুয়ে নিন। বিশেষত মশলা বা চাটনি বানানোর পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধুয়ে নিন। - জার গ্যাসকেট (rubber seal) দেখাশোনা করুন
গ্যাসকেট সময়ের সাথে সাথে নরম হতে পারে হতে পারে। মাঝে মাঝে পরীক্ষা করে দেখুন, প্রয়োজন হলে রিপ্লেস করুন। - মোটরকে বিশ্রাম দিন
একবারে একাধিক ব্যাচ ব্লেন্ড করার সময় থেমে থেমে চালান। দীর্ঘ সময় ব্লেন্ড করলে মোটর গরম হতে পারে এবং ওভারহিট প্রোটেকশন সক্রিয় হতে পারে, যা মোটরের জন্য ঠিক না। একবারে ১ মিনিটের বেশি ব্যবহার করবেন না। ১ মিনিট পর থেমে থেমে ব্যবহার করুন। - ওভারলোড/সম্পূর্ণ ভর্তি করবেন না
জারকে সম্পূর্ণ ভর্তি না করে, একটু ফাঁক রেখে খাবার দিন। অতিরিক্ত লোড দিলে ব্লেড ধীরগতিতে ঘোরবে এবং মোটরের উপর চাপ বাড়বে। - প্রতিরক্ষা হিসেবে ওয়ার্টেজ স্ট্যাবিলাইজার বিবেচনা করুন
যদি আপনার এলাকার লাইন ভোল্টেজ উঠানামা করে বা লোডশেডিং হয়, তাহলে স্ট্যাবিলাইজার ব্লেন্ডারকে কম রিস্কে রাখে। - ক্যাবল, প্লাগ ও বেস পরীক্ষা করুন
নিয়মিত চেক করুন প্লাগ, কর্ড বা ক্যাবল কেমন আছে। যদি কোনো সমস্যা থাকে, ভবিষ্যতের বিপদ এড়াতে সেটা ঠিক করুন । - সার্বিক ওয়ারেন্টি ও স্পেয়ার পার্টস পরীক্ষা
অফিশিয়াল ওয়ারেন্টিসহ ব্লেন্ডার কিনুন। স্পেয়ার পার্টস (জার, গ্যাসকেট, ব্লেড) কিনে রাখুন, যাতে পরে সমস্যা না হয়। - ইনস্ট্রাকশন ম্যানুয়ালটি পড়ুন
আপনার ব্লেন্ডারের সঙ্গে একটি ইনস্ট্রাকশন ম্যানুয়াল দেওয়া থাকবে। সেটি পড়ুন, এবং ব্লেন্ডার ব্যবহার করার সময় নিয়মগুলো মেনে চলুন।
ব্লেন্ডার কেনার আগে যে ভুলগুলো সবাই করে
ব্লেন্ডার বাছাইয়ের সময় আমরা সাধারণত দোকানদারের কথায়, ডিজাইনের উপর, বা “এটা সবাই নিচ্ছে” টাইপ কথায় ভরসা করি। কিন্তু রান্নাঘরের বাস্তব কাজে এগুলো সব সময় ঠিক মতো কাজ করে না।
নিচে এমন কিছু ভুল তুলে ধরা হলো, যেগুলো করলে ব্লেন্ডার কিনে পরে আফসোস করা খুবই স্বাভাবিক। তাই যখন ব্লেন্ডার কিনবেন, চেষ্টা করবেন এই ভুলগুলো করা থেকে বিরত থাকতে।
১) শুধু Watt দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া
আমাদের অনেকেই এই ভুলটা করে থাকি।
অনেকে ভাবেন, “বেশি Watt = বেশি পাওয়ার = বেশি ভালো”
আসলে বিষয়টা এত সোজা না।
ব্লেন্ডারের পারফরম্যান্স নির্ভর করে মোটরের গুণমান, টর্ক (Torque), RPM এবং ব্লেডের ডিজাইনের উপর। Watt শুধু দেখায় ব্লেন্ডারের মোটর কত বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে, শক্তি কতটা দিচ্ছে সেটা না।
- Watt বেশি কিন্তু RPM কম হলে ঘন স্মুথি ঠিকভাবে blend হবে না।
- Watt বেশি কিন্তু টর্ক কম হলে মসলার পেস্ট করতে গিয়ে মোটর আটকে যাবে।
এক কথায়: Watt গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটি একাই সবকিছু নয়।
২) RPM বেশি হলেই ব্লেন্ডার ভালো—এই ভুল ধারণা
বেশি RPM মানেই সব সময় ভালো ব্লেন্ডিং নয়।
কারণ:
- বেশি RPM এয়ার ফোম তৈরি করে
- গরম হয়ে মোটর দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়
- ঘন মিশ্রণ blend করতে গেলে RPM অনেক কমে যায়
বাংলাদেশের হিসাবে ব্লেন্ডারের জন্য balanced RPM + ভালো টর্ক বেশি দরকার।
৩) Jar Capacity ভুল নির্বাচন
বড় পরিবার হলে ১.৫–২ লিটার জার দরকার। কিন্তু অনেকেই ছোট জার নিয়ে ফেলেন, পরে দেখে প্রতিবারই দুই ব্যাচে blend করতে হচ্ছে।
আবার দু’জনের পরিবার হলে বড় ২ লিটারের জার অপ্রয়োজনীয় হয়ে যায়, পরিষ্কার করতে ঝামেলা।
অর্থাৎ: কাজের ধরন অনুযায়ী জারের সাইজ ঠিক করা উচিত।
৪) Blade টাইপকে গুরুত্ব না দেওয়া
ব্লেন্ডারের ব্লেডই আসল কাজ করে। কিন্তু সাধারণত মানুষ ব্লেডের design দেখেই বুঝতে পারে না কোনটা কোন কাজের জন্য ভালো।
ফলে:
- বরফ (ice) blend হয় না
- মশলা ঠিকভাবে গুঁড়া হয় না
- দই/লাচ্ছি ফোমে ভরে যায়
- আঁশযুক্ত ফল (যেমন পেঁপে) মাখামাখা থাকে
৫) Overheat Protection আছে কিনা না দেখা
বাংলাদেশে ভোল্টেজ ড্রপ খুব সাধারণ। যার ফলে মোটর গরম হয়ে যায়, তারপর হঠাৎ করে ব্লেন্ডার বন্ধ হয়ে যায়।
ফলে:
- মোটরের লাইফ কমে
- সার্ভিসিং খরচ বাড়ে
- মাঝে জুস/মশলা অর্ধেক হয়ে বসে থাকে
এই ছোট্ট জিনিসটা না দেখার ফলেই বড় ক্ষতি হয়। সুতরাং, অবশ্যই ওভারহিট প্রোটেকশন আছে কিনা তা দেখে নেবেন।
৬) Warranty/Spare parts উপেক্ষা করা
অনেকে দামের দিকে বেশি তাকান কিন্তু দেখেন না:
- জার আলাদা কিনতে পাওয়া যায় কিনা
- ব্লেড বা rubber gasket পাওয়া যায় কিনা
- কাছাকাছি সার্ভিসিং সেন্টার আছে কিনা
চূড়ান্ত কেনার চেকলিস্ট (Final Buying Checklist)

নিচে একটি সংক্ষিপ্ত চেকলিস্ট দেওয়া হলো, ব্লেন্ডার কেনার সময় এগুলো মাথায় রাখলে ভুল করার সম্ভাবনা খুব কমে যাবে:
- মোটর: ৫০০–৭৫০W নির্বাচন করুন, বা আপনার ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী সমন্বয় করুন।
- RPM: ১৮,০০০–২২,০০০ হলে সাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য ভালো।
- ওভারহিট প্রোটেকশন থাকা উচিৎ।
- ব্লেড: স্টেইনলেস স্টিল, ৪ বা ৬ ধারের; serrated ব্লেড থাকলে আরও সুবিধা।
- জার মেটেরিয়াল: ট্রাইটান বা গ্লাস, ১.৫–২ লিটার পর্যাপ্ত।
- Dry Jar থাকলে মসলা বা বাটা করা সহজ হয়।
- লিড লক এবং নন-স্লিপ বেস থাকা সুবিধাজনক।
- স্পেয়ার পার্টস সহজলভ্য হওয়া ভালো।
- ওয়ারেন্টি এবং সার্ভিস সেন্টার থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
- বাজেট অনুযায়ী দাম এবং পারফরম্যান্সের সমন্বয় বিবেচনা করুন।
আরও জানতে পড়ুন: বাংলাদেশে সেরা ব্লেন্ডার তালিকা
শেষ কথা
ব্লেন্ডার বাছাই করার সময় মোটর, RPM, ব্লেড, জার ক্যাপাসিটি এবং বাজেট সব বিবেচনা করা উচিত।
বাংলাদেশি বাজারের বাস্তবতা অনুযায়ী এই গাইড অনুসরণ করলে আপনি দীর্ঘমেয়াদি, সুবিধাজনক এবং পরিবারের জন্য উপযোগী ব্লেন্ডার বেছে নিতে পারবেন। নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত ব্লেন্ডার নির্বাচন করুন এবং দৈনন্দিন রান্না সহজ ও মজাদার করুন।
আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হলো:
- এমন ব্লেন্ডার বাছাই করা যেটি মোটর ও ব্লেড উভয় দিক থেকে ব্যালান্সড
- জারের মেটেরিয়াল এবং ক্যাপাসিটি আপনার ব্যবহার অনুযায়ী ঠিক করা
- এবং অফিশিয়াল ওয়ারেন্টি ও সার্ভিস পার্টস’কে গুরুত্ব দেওয়া
আশা করি এই গাইড পড়ার পর আপনি আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ব্লেন্ডার বেছে নিতে পারবেন।
FAQs (প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন) — ব্লেন্ডার কেনার জন্য
ব্লেন্ডার কি মিক্সার গ্রাইন্ডারের বিকল্প?
না, ব্লেন্ডার এবং মিক্সার গ্রাইন্ডারের কাজ আলাদা।
- ব্লেন্ডার → তরল এবং নরম খাবারের জন্য উপযুক্ত (স্মুদি, মিল্কশেক, লাচ্ছি, সুপ)।
- মিক্সার গ্রাইন্ডার → শুকনো ও শক্ত উপাদান যেমন মসলা, ডাল, বাদাম, আদা-রসুন বাটার জন্য ভালো।
টিপ: দৈনন্দিন খাবারের জন্য সাধারণ পরিবারে ১টি ব্লেন্ডার যথেষ্ট।
কোন ওয়াটের ব্লেন্ডার সাধারণ পরিবারের জন্য যথেষ্ট?
বাংলাদেশি বাস্তবতার জন্য ৫০০–৭৫০ ওয়াটের ব্লেন্ডার ব্যালান্সড এবং টেকসই।
- কম ওয়াট → হালকা কাজের জন্য (স্মুদি, লাচ্ছি)।
- বেশি ওয়াট (৭৫০–১০০০+) → ভারী কাজ যেমন বাদাম বা বরফ ক্রাশের জন্য।
কাচের জার না ট্রাইটানের জার কোনটি ভালো?
- ট্রাইটান জার → হালকা, ভাঙা কম, প্রতিদিনের ব্যবহার সহজ।
- কাচের জার → স্বাস্থ্যসম্মত, রঙ বা গন্ধ ধরে রাখে না, তবে ভাঙতে পারে।
টিপ: ছোট পরিবারের দৈনন্দিন কাজে ১.৫–২ লিটার জার যথেষ্ট।
হ্যান্ড ব্লেন্ডার কি ছোট ব্যাচের জন্য যথেষ্ট?
হ্যাঁ, হ্যান্ড ব্লেন্ডার ছোট ব্যাচের স্মুদি, বেবি ফুড পিউরি, সস বা হুইপিং ক্রিমের জন্য উপযুক্ত।
- তবে বড় ব্যাচ বা শক্ত উপাদান বাটার জন্য ব্লেন্ডার বা মিক্সার গ্রাইন্ডার ভালো।
লোডশেডিং বাংলাদেশে ব্লেন্ডার ব্যবহারে সমস্যা হবে কি?
সাধারণ লোডশেডিং সহ্য করার জন্য:
- কম বা মাঝারি ওয়াটের মোটর + থার্মাল প্রোটেকশন থাকলে ব্লেন্ডার টিকে থাকে।
- বেশি সংবেদনশীল মোটর voltage drop এ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কোন ব্লেড টাইপ সবচেয়ে ভালো?
- ৪ বা ৬ ধারের স্টেইনলেস স্টীল ব্লেড সাধারণ ব্যবহার ও নরম খাবারের জন্য যথেষ্ট।
- Serrated ব্লেড থাকলে শক্ত উপাদান, বরফ বা বাদাম বাটা সহজ হয়।
স্পেয়ার পার্টস ও সার্ভিস কোথা থেকে পাওয়া যাবে?
- স্থানীয় সার্ভিস সেন্টার বা অনুমোদিত রিপেয়ার পয়েন্ট চেক করুন।
- জার, ব্লেড ও গ্যাসকেট সহজলভ্য হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
- ওয়ারেন্টি থাকা মানে after-sales support সহজ।
দৈনন্দিন ব্যবহার vs মাঝে মাঝে ব্যবহার কখন কি ধরনের ব্লেন্ডার দরকার?
- দৈনন্দিন → শক্তিশালী মোটর, পরিষ্কার করা সহজ জার, কম শব্দ।
- মাঝে মাঝে ব্যবহার → সাধারণ ওয়াটের ব্লেন্ডার যথেষ্ট।




